হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী | |
ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম জন্মঃ ১৯২৫ সাল, লক্ষণপুর গ্রাম (বর্তমান সালাম নগর), দাগনভূঁঞা, ফেনী। মৃত্যূ: ০৭ এপ্রিল, ১৯৫২, ঢাকা। মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সম্মুখে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে পুলিশের গুলিতে আহত হন। দেড় মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯৫২ সালের ০৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। | |
শহীদ বুদ্ধিজীবী সেলিনা পারভীন জন্মঃ ৩১ মার্চ ১৯৩১ সাল,৩৬০,নাজির রোড, ফেনী (বর্তমানে শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক)। মৃত্যূঃ ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহিত্যিক, কবি, লেখিকা, বুদ্ধিজীবী শহীদ সাংবাদিক সেলিনা্ পারভীন রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে পাকিস্তানী ও তাদের এ দেশীয় দালাল রাজাকার, আ্লবদর বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। তিনি কর্মজীবনের শুরুতে ‘ললনা’ পত্রিকার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা ‘শিলালিপি’র প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ‘শিলালিপি’তে তিনি অক্ষয় অমর হয়ে থাকবেন সমস্ত অত্যাচারিত নারীদের সাহস ,শক্তি ও প্রেরণাদাত্রী হয়ে। মহাকালের শিলালিপিতে উৎকীর্ণ তার নাম অম্লান দীপ্তিতে উদ্ভাসিত থাকবে বিশ্ববাসীর কাছে। | |
শহীদুল্লাহ কায়সার জন্মঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৭ সাল, মজুপুর গ্রাম, ফেনী। নিখোঁজঃ ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ থেকে। সাংবাদিক ও সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার এর প্রকৃত নাম আবু নাঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ১৯৫২- র ভাষা আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেন। তার এ অনমনীয় সাহসিকতার জন্য তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে ১৪ ডিসেম্বর তিনি অপহৃত হন এবং আর ফিরে আসেননি। বাংলা সাহিত্যে তিনি যথেষ্ট আলো ছড়িয়েছেন। উপন্যাস, কবিতা, ছোটগল্প, নাটক, ভ্রমনকাহিনীসহ সাহিত্যের বহুমুখী সৃষ্টিশীল জগতে ছিল তার সদর্প পদচারণা। ‘সারেং বউ’ ‘সংশপ্তক’ এবং ‘কৃষ্ণচূড়া মেঘ’ ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ ‘কুসুমের কান্না ‘চন্দ্রভানের কন্যা’ (গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত) ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’ ‘পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ’ (ভ্রমন কাহিনী) পরিক্রমা (প্রবন্ধ সংকলন) তার উলে¬খযোগ্য গ্রন্থ। | |
জহির রায়হান জন্মঃ ১৯ আগষ্ট, ১৯৩৫ সাল, মজুপুর গ্রাম, ফেনী। মৃত্যূঃ ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ঢাকা। মহান ভাষা আন্দোলনের একনিষ্ঠ এ কর্মী ২১ ফেব্রুয়ারির ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম ১০ জনের একজন। পরবর্তীতে তিনি একজন সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে দিয়েছেন ভিন্নমাত্রিকতা এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে সম্পৃক্ত করেছেন আধুনিকতার ধারায়। ‘বরফ গলা নদী’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ ,‘আর কতদিন’ ‘তৃষ্ণা’, ‘হাজার বছর ধরে’ প্রভৃতি তাঁর্ উল্লে¬খযোগ্য উপন্যাস এবং ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘কাঁচের দেয়াল’ তাঁর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ নিয়ে তিনি প্রামান্যচিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ নির্মান করেন যা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৭১ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি তাঁর অগ্রজ শহীদুল্লহ কায়সার এর খোঁজে বের হয়ে আর ফিরে আসেন নি। | |
ড. সেলিম আল দীন জন্মঃ ১৯ আগষ্ট, ১৯৪৯ সাল, সেনেরখীল গ্রাম, সোনাগাজী, ফেনী। মৃত্যূঃ ১৪ জানুয়ারী,২০০৮ প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক, নাট্যতত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়,নাট্যকার ও গবেষক: কালজয়ী নাট্যকার বাঙালী সংস্কৃতির নবরুপের দ্রষ্টা-স্রষ্টা, খ্যাতনামা অধ্যাপক গবেষক আচার্য সেলিম আলদীন ছিলেন ঔপনিবেশিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও শিল্পনন্দনতত্বের সর্বগ্রাসী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মূর্তিমান প্রতিবাদ। বাঙালীর শিল্পতত্বের পাথুরে ভূমিতে পড়ে থাকা বাংলা নাটকের কঙ্কালে প্রাণের ফুল ফোটানো বাঙালী নাটকের বিশ্বায়নে অন্যতম পুরোধা। বাংলা নাট্য আঙ্গিকের ধারণক্ষমতা এবং এর বিচিত্র স্বভাব আবিষ্কারে, নাট্যভাষার ব্যাপক নবীকরণে, সংলাপে গভীর অর্থান্যাসে, দর্শনের নব নব দিগন্তের ছোঁয়ায় সমুজ্জ্বল এবং আঙ্গিকের নতুনতায় স্বতন্ত্র সৃষ্টির আলোক প্রভায় এবং বাংলা নাটকের ইতিহাস বিণির্মানে ও বিশ্বায়নে তিনি ছিলেন তন্নিষ্ট শিল্পী। তিনি প্রবর্তন করেন বিশেষ শিল্পরীতি কথনাট্য এবং প্রতিষ্ঠা করেন গ্রাম থিয়েটার। নাট্য মঞ্চায়ন,আঙ্গিক বিনির্মাণ, নাট্য ভাবনায় প্রতিনিয়ত তিনি অতিক্রম করেছেন নিজেকে । মুনতাসির ফ্যান্টাসী, যৈবতী কন্যার মন, কীর্তন খোলা, প্রাচ্য, বনপাংশুল, নিমজ্জনের মত নাটক রচনা করে বাংলা নাটক ও নাট্যতত্বকে বিশ্ব নাটক ও নাট্যতত্বের পংক্তিভূক্ত করেছেন। |
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS